শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল ২০২৫, ২৮শে চৈত্র ১৪৩১


‘মেরে ফেলতে’ বলা শিশুকে বাঁচালেন ঢামেকের চিকিৎসকরা


প্রকাশিত:
৩০ মে ২০২৩ ০০:২৯

আপডেট:
১১ এপ্রিল ২০২৫ ১০:২৭

 ফাইল ছবি

মায়ের গর্ভেই জন্মগত ক্রটি ধরা পড়ায় প্রতিবেশীদের পরামর্শে একটি অনাগত সন্তানকে মেরে ফেলতে চায় পরিবার। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকদের চেষ্টায় জীবন বেঁচে গেছে শিশুটির। তার নাম বেহেশতি ঝর্ণা।

সোমবার (২৯ মে) ঢামেক হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. টাবলু আব্দুল হানিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মায়ের গর্ভে নবজাতকটির বয়স যখন ২২ সপ্তাহ, তখন আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে জানা যার তার পাকস্থলির পর ক্ষুদ্রান্ত্রের শুরুর ডিওডেনামে বাঁধার পরের অংশ জেজুনামে খাবার যাবে না। মেডিকেলের ভাষায় যাকে বলা হয় ডিওডেনাল এট্রেসিয়া। শিশুটির পরিবার এবং প্রতিবেশীরা নবজাতকটির এই জন্মগত ত্রুটির কথা জানতে পেরে গর্ভেই তাকে মেরে ফেলার পরামর্শ দেন।

পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের গাইনীর সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মুনিরা ফেরদৌসের কাছে অনাগত শিশুটির বাবা-মা শরণাপন্ন হলে তিনি তাদের ঢামেক হাসপাতালে পাঠান। এরপর ঢামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসকরা মা-বাবাকে আশ্বাস দেন, শিশুটি পৃথিবীতে এলে তারা তাদের সর্বস্ব চেষ্টা দিয়ে শিশুটিকে সুস্থ করতে পারবেন।

জানা গেছে, সবশেষে চিকিৎসকদের চেষ্টায় শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখেছে। এ্যানেস্হেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দিলীপ ভৌমিক, নিওনেটাল সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জগলুল গাফফার খান জিয়া এবং ডা. পার্থ সারথি মজুমদার তিনদিন বয়সী ১.৭ কেজি ওজনের শিশুটির বাইপাসের অপারেশন করেন। পরে হাসপাতালের শিশু নবজাতক বিভাগের ডা. ইশরাত লাকী, এনআইসিইও কেয়ার টিম এবং শিশু সার্জারি বিভাগের ডা. আহমদ জাহিদ হোসেন সোহেলের ফলোআপ অপারেশনের ছয়দিন পর শিশুটি মায়ের বুকের দুধ খেতে পায়। সবশেষে আজ (সোমবার) শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. টাবলু আব্দুল হানিফ বলেন, ত্রুটি থাকা বাচ্চাকে মায়ের গর্ভে থাকার সময় থেকে আমরা ফলোআপ করি। কিছু ক্ষেত্রে জন্ম নেওয়ার পর শিশুটিকে আমরা স্বাভাবিকও পাই। তবে কিছু ক্ষেত্রে সে আমাদের ফলোআপে থাকে। সবশেষে ফলোআপ অপারেশন করার পর সে ভালো হয়ে যায়।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে বাচ্চা না হওয়ার জন্য বন্ধ্যাত্ব একটা আলাদা বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। যেখানে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে, সেখানে অবশ্যই মায়ের গর্ভের কোনও বাচ্চা মেরে ফেলাটা হবে খুবই নির্মমতা। এরকম কোনও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অবশ্যই শিশু সার্জনদের মতামত নেবেন। জটিল কার্ডিয়াক এনোমালি ছাড়া বেশিরভাগ জন্মগত ত্রুটি অপারেশনের মাধ্যমে ভালো করা সম্ভব। আর যেসব বাচ্চার বেশি জটিলতা থাকে তা আগেই এবরোশন হয়ে যায়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top