রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


শিরোচ্ছেদ থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আফগান নারী সাংবাদিক


প্রকাশিত:
১২ আগস্ট ২০২১ ১৫:৩২

আপডেট:
১২ আগস্ট ২০২১ ১৬:০৩

প্রতীকী ছবি

তালেবানের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক নারী সাংবাদিক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে নাম প্রকাশ না শর্তে ২২ বছর বয়সী ওই নারী সাংবাদিক জানান, গত সপ্তাহে তার বাড়িতে তালেবান যোদ্ধারা তাকে খুঁজতে যান। বিষয়টি টের পেয়ে ওই তরুণী বোরকা পরে পালিয়ে যান।

তালেবানের ভয়ে নিজের নাম প্রকাশ করেননি ওই সাংবাদিক। এমনকি ভয়ে নিজের শহরের নামও জানাননি তিনি।

ওই নারী সাংবাদিক জানান, আমার পালিয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু আমাদের পুরো প্রদেশ তালেবান দখল করে নেয়। শুধু বিমানবন্দরই সরকারি বাহিনীর দখলে আছে। যেহেতু আমার বয়স ২২ বছর আর তালেবান তরুণীদের জোর করে তাদের যোদ্ধাদের সাথে বিয়ে দিচ্ছে তাই আমি এমনিতেও সেখানে নিরাপদ ছিলাম না। তাছাড়া আমি একজন নবীন সাংবাদিক। তালেবান আমার সব সহকর্মীদেরও খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাই আমি পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

প্রথমে তিনি তার মামার সাথে তাদের গ্রামে পালিয়ে যান। কিন্তু ওই সাংবাদিক গোপন খবরে জানতে পারেন, তালেবান তার ওই গ্রামে পালানোর খবর টের পেয়ে গেছে এবং সেখানে এসে তাদের প্রত্যেকের শিরোচ্ছেদ করার পরিকল্পনা করছে। এরপর ওই সাংবাদিক আর তার মামা আবার সেখান থেকে আরও দূরে পালিয়ে যান।

টেলিফোনের লাইনগুলো সব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ওই তরুণীর সাথে তার বাবা-মার কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

গার্ডিয়ানকে ওই সাংবাদিক বলেন, আমি ভীষণ আতঙ্কিত। জানি না আমার সামনে কী অপেক্ষা করছে। আমি কী আর বাড়ি ফিরতে পারব? আমি কী আমার বাবা-মাকে আবার দেখতে পারব? আমি কোথায় যাবো? কীভাবে বাঁচবো?

এদিকে, কয়েকদিন আগেই আফগানিস্তানে বোরকা না পরায় এক তরুণীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তালেবানের বিরুদ্ধে।

এর আগে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর এক বিজ্ঞপ্তিতে নারীরা বাড়ি থেকে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া একা বের হতে পারবেন না আর পুরুষদেরও লম্বা দাড়ি রাখতেই হবে বলে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে তাকহার প্রদেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তালেবান। এমনকি নারীদের বিয়ের জন্য পণ প্রথাও ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিল সংগঠনটি।

এমনকি তালেবান সদস্যদের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইমামদের কাছে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী অবিবাহিত ও বিধবা নারীদের তালিকা চেয়েছে তালেবান।

এসব ঘটনা আফগানিস্তানে ৯০ দশকের তালেবান শাসন ব্যবস্থার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা ছিল তালেবানের হাতে। সে সময় চুরির জন্য হাত কেটে দেওয়া হতো, পাথর নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হতো, এমনকি নারীদের ওপর ছিল নানা রকম বিধিনিষেধ।

আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েন হওয়ার আগে এসব আইন জারি করেছিল তালেবান। তখন দেশটিতে নারীদের চাকরি তো দূরের কথা, কোনো পুরুষ আত্মীয় ছাড়া বাইরে বের হওয়াও নিষেধ ছিল। এমনকি এই নিয়ম না মানলে কঠোর শাস্তিও ভোগ করতে হতো।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top