বাংলাদেশি তকমা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ১৭ শ্রমিককে আটক ওড়িশায়
প্রকাশিত:
২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:১১
আপডেট:
২৪ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৪৬
প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশায় পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশার কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার ১৭ জন শ্রমিককে।
শ্রমিকদের পরিবারের দাবি, বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি বলে লালগোলা এবং রঘুনাথগঞ্জের ১৭ জন শ্রমিককে গতকাল রোববার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতভর তাদের থানায় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এ নিয়ে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ।
ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক বলেন, ‘‘প্রথমে এই ১৭ শ্রমিককে ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে কয়েকজনকে আলাদা করে কেন্দ্রপাড়া টাউন, কেন্দ্রপাড়া সদর, রাজনগর এবং আরও একটি থানায় রাখা হয়। কেন্দ্রপাড়া থানায় রাখা হয়েছিল ১২ জনকে।’’
তিনি আরও বলেন, “সকলের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় বলে খবর পেয়েছি। ঠিকাদার শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাঁকেও আটক করে হেনস্থা করেছে পুলিশ।”
কিছুদিন আগে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমা শহরের শমসেরগঞ্জ এলাকার কয়েক জন শ্রমিক একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হন ওড়িশা গিয়ে। তার আগে একই জেলার ভগবানগোলা শহরের ১১ জন শ্রমিকও ওড়িশায় হেনস্থার শিকার হন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
ওড়িশায় আটকে থাকা এক শ্রমিক সইফুদ্দিন মোমিনের ভাই নাসিম আনসারি বলেন, “কাজের জন্য আমাদের এলাকার অনেকেই কটক যান, কেউ কেউ ভুবনেশ্বর যান। গত ২০-৩০ বছর ধরে অনেকে কাজ করছেন ওখানে। আগে কোনও দিন এই ঘটনা ঘটেনি। মহিশাস্থলি গ্রামের ১০ জন ও সুতি থানার বাহাগুলপুর গ্রামের দু’জনকে আটকে রাখা হয়। খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়নি। তথ্য যাচাইয়ের জন্য ওদের কুঁড়েঘরে রেখে দেওয়া হয়েছিল বলে জেনেছি। সবাইকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটকে রাখা হয়।”
শ্রমিকদের দাবি, তাদের কাছে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড-সহ সমস্ত নথিপত্র রয়েছে। সে সব খুঁটিয়ে দেখেও হয়রানি করছে পুলিশ। অনুপ্রবেশকারী বলে মিথ্যা সন্দেহে বন্দি করে রাখা হচ্ছে।
এদিকে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের হস্তক্ষেপে রোববার আটক শ্রমিকেরা আজ সোমবার মুক্ত হয়েছেন। ফারাক্কার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শেখ শামসুদ্দিন বলেন, “ওড়িশায় যাদের অবৈধ ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল, ওই রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তাদের সবাইকে মুক্ত করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখছি আমরা।’’

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: