রবিবার, ১৬ই মার্চ ২০২৫, ২রা চৈত্র ১৪৩১


রোজা রেখে গিবত করলে যে ক্ষতি হবে


প্রকাশিত:
১৬ মার্চ ২০২৫ ১২:১৪

আপডেট:
১৬ মার্চ ২০২৫ ২৩:০৬

প্রতীক ছবি

অনেকে রোজা রেখে পানাহার, স্ত্রী সহবাস ও রোজা ভঙ্গকারী বিভিন্ন কারণ থেকে বিরত থাকলেও কিছু কিছু হারাম করে যান অনায়েসে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, গিবত, পরনিন্দা, চোগলখোরী ও মিথ্যা বলা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া এবং প্রতারণা করা ইত্যাদি।

এই কাজগুলো যে রোজার মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এমন হতে পারে না যে, আপনি কিছু ভালো ও বৈধ কাজ করলেন এবং একইসঙ্গে আরও কিছু হারাম ও অবৈধ কাজও চালিয়ে গেলেন। নেক আমলের সঙ্গে সঙ্গে মন্দ আমল থেকেও বিরত থাকা জরুরি।

অনেক আলেমের মতে গিবত ও চোগলখুরির মতো গুনাহের কারণে রোজা ভেঙে যায়। ইমাম ইবনে হাযম রহ. এই গুনাহগুলোর কারণে রোজা ভেঙে যাওয়ার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করছেন। তিনি তার মতের পক্ষে একটি হাদিস বর্ণনা করছেন, যেখানে দুই নারীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে—

যারা রোজা রাখার পর একদম মারা যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হলো। তখন নবীজি সা.-এর কাছে তাদেরকে নিয়ে গেলে তিনি তাদেরকে বমি করতে বললেন। বমিতে পুঁজ ও রক্ত দেখা গেল।

রাসূল সা. বললেন, নিশ্চয় এই দুইজন নারী আল্লাহ যা (স্ত্রী সহবাস ও পানাহার) হালাল করেছেন (রোজার বিধানের কারণে) তা থেকে বিরত থেকেছেন কিন্তু তিনি যা হারাম করেছেন (গিবত-পরনিন্দা) তাতে লিপ্ত হয়ে তারা (মৃত ভাইয়ের গোশত খেয়ে) রোজা ভেঙে ফেলেছে। (মুসনাদে আহমাদ, ২৩৬৫৩, হাদিসটির সনদ যইফ)

এই হাদিসটি দুর্বল। বিশুদ্ধ হাদিস অনুযায়ী গিবত-পরনিন্দা, চোগলখুরির কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় না, তবে এসব মারাত্মক পাপ ও শরীয়ত বিরোধী কাজ।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘নিশ্চিত ধ্বংস ওই সব লোকের জন্য, যারা পেছনে পরনিন্দা করে বেড়ায় এবং সম্মুখে গালাগাল করে।’ (সূরা হুমাজাহ, আয়াত: ১)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন কারো পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি স্বীয় মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই করো।’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত : ১২)

একদিন মহানবী (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা কি জানো গিবত কাকে বলে?’ সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন।’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘গিবত হলো, তুমি তোমার মুসলমান ভাইয়ের বর্ণনা (তার অসাক্ষাতে) এমনভাবে করবে যে সে তা শুনলে অসন্তুষ্টই হবে।’ অতঃপর তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি যা কিছু বলব, তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রেও কি তা গিবত হবে?’ তিনি জবাব দিলেন, ‘তুমি যা বলছ, তা যদি তোমার ভাইয়ের মধ্যে পাওয়া যায়, তাহলে সেটা গিবত হবে। আর যদি তা না পাওয়া যায়, তাহলে তা হবে “বুহতান” বা মিথ্যা অভিযোগ।’ (মুসলিম)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top