সোমবার, ৭ই এপ্রিল ২০২৫, ২৪শে চৈত্র ১৪৩১


ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিম স্কলারদের ফতোয়া


প্রকাশিত:
৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৫৫

আপডেট:
৭ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৫৯

ছবি সংগৃহীত

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদের আহ্বান জানিয়ে ফতোয়া জারি করেছে বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিতদের নিয়ে গঠিত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্স আইইউএমএস।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সরকারের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কারণে সমস্ত মুসলিম এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে উদ্দেশ্য করে এই ধর্মীয় ফরমান জারি করা হয়।

আন্তর্জাতিক মুসলিম সংস্থাটির মহাসচিব আলী আল-কারাদাঘি শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, সমস্ত মুসলিম দেশকে এই গণহত্যা এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে অবিলম্বে সামরিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে হবে।

১৫ দফা সম্বলিত ফরমানে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে আরব ও ইসলামিক সরকারগুলো ব্যর্থ হলে তা ইসলামিক আইন অনুযায়ী আমাদের নিপীড়িত ফিলিস্তিনি ভাইদের বিরুদ্ধে বড় অপরাধ বলে গণ্য হবে।

আলী আল-কারাদাঘিকে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় কর্তৃপক্ষদের একজন বিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে তার ফরমানগুলো বিশ্বের প্রায় দুই বিলিয়ন সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব বহন করে।

১৪ জন বিশিষ্ট মুসলিম পণ্ডিতের সমর্থনে জারি করা এই ফরমানে সমস্ত ইসলামি দেশকে তেলআবিবের সাথে ‘তাদের শান্তি চুক্তি পর্যালোচনা’ করার এবং নৃশংস যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানদের ট্রাম্প প্রশাসনকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এক বিবৃতিতে আলী আল-কারাদাঘি বলেছেন, গাজার মুসলমানদের নির্মূলে কাফের শত্রুকে সমর্থন করা নিষিদ্ধ, তা সে যে ধরণের সমর্থনই করুক না কেন। এর কাছে অস্ত্র বিক্রি করা, অথবা সুয়েজ খাল, বাব আল-মান্দাব, হরমুজ প্রণালী, অথবা অন্য কোনো স্থল, সমুদ্র বা আকাশপথের মতো বন্দর বা আন্তর্জাতিক জলপথের মাধ্যমে এর পরিবহন সহজতর করা নিষিদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ইউনিয়ন একটি ফতোয়া জারি করেছে, যাতে গাজার আমাদের ভাইদের সমর্থনে দখলদার শত্রুর আকাশ, স্থল এবং সমুদ্র অবরোধের দাবি করা হয়েছে।

বর্তমানে, ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং এর ফলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, এর মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, গত শুক্রবার সকালে ইসরায়েলি বাহিনী আরও অন্তত ৩০ জনকে হত্যা করেছে। গাজার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে এবং বহু ফিলিস্তিনি তাদের শেষ মুহূর্তের বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পাঠাচ্ছে, “আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছি, আমাদের কণ্ঠস্বর শোনা হোক।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইতিমধ্যেই হামলা তীব্র করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এই পরিস্থিতিতে, মুসলিম পণ্ডিতরা গাজার পক্ষে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন এবং মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তর ভূমিকার জন্য তাদের দাবি অব্যাহত রেখেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি সরকারের গণহত্যার যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ হাজার ৬০৯ জন নিহত হয়েছে। গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সামরিক বিষয়ক দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top