নামের সঙ্গে হাজি বা আলহাজ শব্দ ব্যবহারের বিধান
প্রকাশিত:
১১ জুন ২০২৫ ১৫:২৫
আপডেট:
১৩ জুন ২০২৫ ০৪:০৭

হজ পালনের পর অনেকেই নামের শুরুতে বা শেষে আলহাজ ও হাজি শব্দটি যুক্ত করেন। হাজি শব্দের অর্থ হলো ‘হজ আদায়কারী’ বা যিনি হজ করেছেন। যিনি হজের ফরজ আদায় করেছেন তাকে বলা হয় ‘হাজি’। আরবিতে শুরুতে আলিফ লাম যোগ করে বলা হবে ‘আলহাজ’। উর্দুতে বলা হয় হাজি।
সংসার ও সমাজের কাছ থেকে চিরবিদায় নিয়ে কাফনের কাপড় সাথে নিয়ে কমপক্ষে ছয় মাসের দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে বিগত দিনে আমাদের দেশের যেসব প্রবীণ ব্যক্তি হজ করে ফিরে আসতেন এবং সকল অন্যায় ও অসামাজিক কাজ-কর্ম থেকে দূরে থেকে দ্বীনী কাজে নিজেকে লিপ্ত রাখতেন। তাদের নাম ধরে না ডেকে বিশেষ শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে ‘আলহাজ’ বা হাজি বলে সম্বোধন করা হত।
বিশেষ গুণ বা বৈশিষ্ট্যের কারণে মানুষকে এভাবে সম্মান করে ডাকা আদৌ অন্যায় নয়।
তবে বর্তমান যুগে হজ সহজসাধ্য হওয়ায় এই প্রচলন কমে এসেছে। অহংকার বা গর্ব প্রকাশার্থে না হলে সাধারণ পরিচিতির জন্য এই বিশেষণ ব্যবহার করা দোষণীয় নয়। তবে বিনয় ও ইখলাসের দৃষ্টি থেকে দেখলে এ থেকে দূরে থাকাই উত্তম। আর সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির নিয়তে কেউ এ কাজ করলে তা হবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮)।
মহানবী (সা.) হজের সময় দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ, তোমার জন্য হজ করতে শুরু করলাম, যশ-খ্যাতি যেন আমাদের উদ্দেশ্য না হয়।’ (ইবনে মাজাহ)
এ বিষয়ে সবারই সচেতন থাকা প্রয়োজন যে, হজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ রোকন এবং একটি ফজিলতপূর্ণ ইবাদত, যা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই আদায় করতে হবে।
হাজি বা আলহাজ উপাধী পাওয়ার জন্য হজ করা কিংবা হজ আদায়ের পর এই উপাধীর আশায় থাকা দুটোই রিয়ার অন্তভূর্ক্ত যা ইবাদতের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা সব বিনষ্ট করে দেয়।
তাই হজ আদায়কারীর নামের সঙ্গে হাজি বা আলহাজ যুক্ত না করলে তাতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা শরিয়তসম্মত নয়। তবে কেউ যদি শ্রদ্ধা করে আলহাজ বা হাজি সাহেব বলে ডাকেন, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। বরং তা ইসলামে প্রশংসিত বিষয়। মহানবী (সা.) সাহাবিদের বিভিন্ন ভালো কাজের দিকে সম্বন্ধ করে উপাধি দিতেন। (ফাতহুল বারি, হাদিস: ৩৬৭৯)।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: