সৌদি আরব যেভাবে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো দল
প্রকাশিত:
২২ মে ২০২৫ ১১:২৮
আপডেট:
২২ মে ২০২৫ ১৫:০৬

বিপদটা আসলে বাংলাদেশই বাড়াল। দুই ম্যাচের সিরিজটা থাকলেই ভালো হতো। দ্বিতীয় ম্যাচের হারটাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া যেত। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে এখন টানা দুই হারের পর এমন কিছু বলার সুযোগও নেই। কেন যে বিসিবি থেকে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বাড়ানোর অনুরোধ করা হলো! এক অনুরোধের খেসারতে এখন মানসম্মান নিয়ে টানাটানি।
আরব-আমিরাতের অবশ্য সম্মান অনেক বেড়ে গেছে। টেস্ট খেলুড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয় (২–১) বলে কথা। এর চেয়ে বড় বিষয়, কাল রাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয় দিয়ে আমিরাত একটি তেতো স্বাদ হয়তো ভুলতে পারবে। দলটি যে গত ডিসেম্বরেই সৌদি আরবের কাছে হেরে গিয়েছিল!
গালফ টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের একটি ম্যাচে সৌদির দেওয়া ১৮২ রান তাড়া করতে পারেনি আমিরাত। এই ওয়াসিমরাই তখন খেলেছেন। সেই আমিরাত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ম্যাচে ২০০ রানের বেশি তাড়া করে জিতল। যুক্তিবিদ্যার সূত্র তো বলছে, সৌদি আরবও এখন বাংলাদেশের চেয়ে ভালো দল। এই যুক্তি দিয়ে অবশ্য বাংলাদেশকেও দুনিয়ার সেরা দল বানানো যায়।
বাংলাদেশও তো অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়েছে। সেই হিসাবে এই যুক্তিতে আপাতত বাংলাদেশ ক্রিকেট ভর করতেই পারে—বাংলাদেশ একদিন বিশ্বের সেরা দল হবেই। সেটা হওয়ার জন্য আপাতত এটাও মানতে হবে—সৌদি আরব যেহেতু আমিরাতের বিপক্ষে জিতেছে আর আমিরাত বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে, তাই সৌদিরা আপাতত বাংলাদেশের চেয়ে ভালো দল। কারও কারও হয়তো জানার ইচ্ছা হতে পারে, বর্তমান টি–টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে সৌদি কততম দল। সে ক্ষেত্রে তিনটি দলের অবস্থানই জানানো ভালো। টি–টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ৯ম, আরব আমিরাত ১৫তম এবং সৌদি আরব ৩১তম।
সমস্যাটা এই মাসেরও থাকতে পারে। মানে মে মাস। এই মাসেই তো গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হেরেছিল টাইগাররা। সিরিজের শেষ আর শুরুতেই একটা মিল আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হয়েছিল ২১ মে। আর আমিরাত সিরিজ শেষ হলো ২১ মে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা এখন বাড়াবাড়ি। কারণ, এই চিত্র তো বহুদিনের। পেসার হয়েও কাল বাংলাদেশের দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়ে উঠতে হয়েছে হাসান মাহমুদকে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে হাসান ব্যাট হাতে দারুণ করেছিলেন। দ্বিতীয় টেস্টে মেহেদী হাসান মিরাজের সেঞ্চুরিতে তাঁর বড় অবদান ছিল। কালও করলেন ২৬, তা–ও অপরাজিত।
হাসান এই ইনিংস তিনি খেলেছেন ‘শক্তিশালী’ আমিরাতের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে। যাদের বোলিং তোপে ১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৮ উইকেটে ৮৪। তাতে নন-টেস্ট প্লেয়িং দেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার বিব্রতকর লজ্জাও উঁকি দিচ্ছিল; যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
ব্যাটসম্যান শরীফুলও কাল দেখিয়েছেন কীভাবে ইনিংস শেষ করতে হয়। ৭ বলে ১৬ রানের ‘ক্যামিও’ খেলেছেন। হাসান ও শরিফুল কাল ১০ম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রানের জুটি গড়েন। তা–ও আবার মাত্র ১২ বলে! বলা যায় আইপিএলের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে টেক্কা দিয়েছেন দুই বোলার। কালই তো আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস দিল্লির বিপক্ষে শেষ দুই ওভারে তুলেছে ৪৮ রান। প্রায় কাছাকাছিই তো!
দুশ্চিন্তা কিসের...আমিরাত সিরিজকে একটি বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা ধরে নেওয়া যায়। বছরের পর বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অধারাবাহিক ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশ নিশ্চয়ই পাকিস্তান সিরিজে ভালো করবে। আর আমিরাত সিরিজটা তো মূলত ছিল যাত্রাবিরতির। আসল খেলা দেখা যাবে তো পাকিস্তানে। তখন হয়তো বোঝা যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আসল সামর্থ্য!
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: