১০ হাজার বাস রিজার্ভ
জামায়াতের সমাবেশে অংশ নেবে ১০ লাখের বেশি নেতাকর্মী
প্রকাশিত:
১৫ জুলাই ২০২৫ ১৯:৪৮
আপডেট:
১৬ জুলাই ২০২৫ ০৩:৫৯

আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশকে দলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উপস্থিতি ও সাড়াদানকারী সমাবেশে পরিণত করতে প্রতিদিনই ঢাকাসহ সারাদেশে মিছিল, মিটিং ও গণসংযোগ করছে দলটি।
দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, সমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে লঞ্চ ও ট্রেন বাদ দিয়ে শুধু ১০ হাজার বাস ভাড়া করা হয়েছে। তিনি আশা করছেন— ১০ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটবে এবং এর জন্য শুধু ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক সার্বিক শৃঙ্খলা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকবে।
জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পুলিশের সার্বিক সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে সোয়া ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ। অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই বৈঠকে অংশ নেন।
পুলিশের সহযোগিতার আশ্বাস ও সমাবেশ ব্যবস্থাপনা
বৈঠক শেষে অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কয়েকদিন আগেও ডিএমপিতে এসেছিলাম। সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৯ জুলাই জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশ সফল, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা পুলিশের কাছে সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়েছি। তখন ডিএমপির পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকের পর আজকে আমরা আবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমাদের যারা নেতৃবৃন্দ, কর্মীরা সারাদেশ থেকে আসবেন, তাদের গাড়ি পার্কিং, কোন রুটে গাড়ি ঢুকবে, বের হবে, মাঠে মাইক সেটিংসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। তারা আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সবমিলিয়ে আমাদের পরিকল্পনা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ সফল করা।
জুবায়ের জানান, যখন যেটা প্রয়োজন, পুলিশের পক্ষ থেকে সেই সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তিনি আশা করছেন যে, সমাবেশে আসা-যাওয়া, নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ট্রাফিক ব্যবস্থা সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ হবে। জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সবার যোগাযোগের নম্বর ডিএমপিকে দেওয়া হয়েছে।
সম্ভাব্য শঙ্কা ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের হুমকি বা সমাবেশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত এ ধরনের শঙ্কা করছি না। তারপরও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, বিশেষ করে ঢাকা মহানগর জামায়াতসহ সবাই সাবধান থাকব, সাবধান আছি। অনেক গেদারিং হবে, অনেক অনেক নেতাকর্মী আসবেন। নিরাপত্তাজনিত যেসব বিষয় রয়েছে, সেগুলো নিয়েই মূলত পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বা পরিস্থিতি এড়াতে সবক্ষেত্রেই সাবধান থাকি সেজন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সমাবেশ বাস্তবায়নসহ শৃঙ্খলা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, সিনিয়র নেতৃবৃন্দের যাতায়াত, গাড়ি ঢোকা-বের হওয়া, পার্কিং ব্যবস্থাপনাসহ সবকিছুর জন্য ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে।
আমরা তো আশা করছি ইতিহাসের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকবে জাতীয় সমাবেশে। এখন পর্যন্ত বিপুল সাড়া পাচ্ছি। শুধু ১০ হাজারের মতো বাস আসবে। এ ছাড়া, ট্রেন, লঞ্চ তো আছেই। আশা করছি ১০ লাখের বেশি জনসমাগম হবে, যোগ করেন জুবায়ের।
ডিএমপির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলে অন্যরা হলেন- কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলাওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন।
ডিএমপির পক্ষ থেকে সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইমস অ্যান্ড অপারেশন) নজরুল ইসলাম। এ ছাড়া, সভায় উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম কমিশনার (অপারেশ) মো. শহীদুল্লাহ, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) গৌতম কুমার বিশ্বাস, রমনা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলমসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: