বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১


বরগুনা হানাদারমুক্ত দিবস আজ


প্রকাশিত:
৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:১৬

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ২২:৩৭

ফাইল ছবি

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর, ইতিহাসের আজকের এদিনে চূড়ান্ত বিজয়ের আগে হানাদারমুক্ত হয় বরগুনাবাসী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ নং সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের অধীনে ছিল এ জেলা।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বরগুনার মুক্তিকামী সহস্রাধিক তরুণ বাঁশের লাঠি, কয়েকটি রাইফেল ও বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তবে সে সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের শতভাগ সক্ষমতা না থাকায় পার্শ্ববর্তী জেলা পটুয়াখালী দখলে নেয় পাকবাহিনীরা। পরে তারা বরগুনা দখলে নিয়ে বিভিন্ন থানা ও তৎকালীন মহকুমা সদরে অবস্থান করে। ওই সময়ে এ এলাকায় নারী নির্যাতন ও নির্বিচারে গণহত্যা চালায় পাকবাহিনীরা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসযজ্ঞ চলাকালীন বরগুনার মুক্তিযোদ্ধারা অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে তাদের মোকাবিলায় প্রশিক্ষিত হতে থাকেন।

এরপর কয়েক মাসের ব্যবধানে মুক্তিযোদ্ধারা প্রশিক্ষিত হয়ে যুদ্ধের জন্য যে যার অস্ত্র নিয়ে বরগুনায় ফিরে আসেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় নবম সেক্টর বুকাবুনিয়ার বরগুনা ও ঝালকাঠির ২১ জন মুক্তিযোদ্ধা রাত তিনটার দিকে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে নৌকাযোগে বরগুনার খাকদোন নদীর পোটকাখালীতে অবস্থান নেন। ফজরের আজানকে যুদ্ধ শুরুর একটি সংকেত হিসেবে ব্যবহার করেন তারা। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিনারে ওঠে বরগুনার ৬টি স্থানে ভাগ হয়ে একত্রে গোলাগুলি শুরু করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

দ্বিতীয় দফায় গোলাগুলি করতে করতে তারা বরগুনার জেলখানার দিকে আগাতে থাকেন। পরে জেলখানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করিয়ে এসডিও অফিসের সামনে নিয়ে আসেন। তৎকালীন এসডিও আনোয়ার হোসেনকে আত্মসমর্পণ করান। দুপুর ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা বরগুনাকে পাকবাহিনীর হাত থেকে দখলমুক্ত করে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বুকাবুনিয়া উপ-সেন্টারে ফিরে যান।

এ অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুখরঞ্জন শীল বলেন, ডিসেম্বর মাস বাঙালির কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের দেশ মুক্ত হলেও বরগুনা মুক্ত হয় ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে এ দিন ভোররাতে বরগুনার তিনদিক থেকে গোলাগুলির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা বরগুনায় অবস্থানরত কিছু রাজাকার ও পুলিশকে আত্মসমর্পণ করান। বাকিরা বরগুনা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তরুণ প্রজন্মের কাছে আজকের দিনটিকে তুলে ধরতে বরগুনার বেশ কয়েকটি সংগঠন প্রতিবছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস যেভাবে পালন করা হয় ঠিক তেমনি ৩ ডিসেম্বরকে বরগুনা হানাদারমুক্ত দিবস হিসেবে সবাইকে পালন করতে আহ্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব মৃধা বলেন, বরগুনাকে মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সত্তার খানের নেতৃত্বে আমি সেকেন্ড-ইন কমান্ড হিসেবে যুদ্ধ করেছি। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। সেদিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী নবম সেক্টরের বুকাবুনিয়া উপ-সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে সশস্ত্রভাবে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের আত্মসমর্পণ করানোর মাধ্যমে বরগুনাকে হানাদার মুক্ত করা হয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top